মে ১৩, ২০২৫
মাঠের রাজনীতি বনাম সোশ্যাল মিডিয়ার রাজনীতি: নতুন দলগুলোর বিভ্রান্তি ও পুরোনো দলগুলোর পরিপক্বতা
মাঠের রাজনীতি আর সোশ্যাল মিডিয়ার রাজনীতি এক বিষয় নয়। কিন্তু নতুন রাজনৈতিক দলগুলো এখনো এই পার্থক্যটা বোঝার মতো রাজনৈতিক পরিপক্বতা অর্জন করতে পারেনি বলে মনে হচ্ছে! তাদের কার্যক্রম প্রধানত সোশ্যাল মিডিয়াকেন্দ্রিক, যেখানে জনপ্রিয়তা, ট্রেন্ড ও লাইকের রাজনীতিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। অথচ বাস্তব রাজনৈতিক ক্ষমতার কাঠামো গড়ে ওঠে মাঠের রাজনীতির ওপর নির্ভর করে—জনসংযোগ, সংগঠন, এবং জনভিত্তিক কার্যক্রমের ভিত্তিতে।
এই প্রেক্ষাপটে পুরোনো দুটি দল—বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং জামায়াতে ইসলামী—এখনো অনেক এগিয়ে। যদিও জামায়াত বর্তমানে নিবন্ধনহীন এবং বিএনপি রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা, তবু তাদের দীর্ঘদিনের মাঠের অভিজ্ঞতা, সুসংগঠিত কাঠামো এবং জনসম্পৃক্ততা তাদের একটি কার্যকর রাজনৈতিক অবস্থানে রাখছে। তারা জানে কখন কোন ভাষা ব্যবহার করতে হয়, কাকে কখন পাশে টানতে হয়, আর কখন প্রতিপক্ষকে কৌশলে একঘরে করে দিতে হয়।
সম্প্রতি বিএনপির এক সিনিয়র নেতার বক্তব্য ছিল: “বিএনপির ট্রেনে অন্যরা, অন্যদের ট্রেনে বিএনপি না।” এটি একটি রাজনৈতিক স্লোগান নয়—বরং এটি একটি সুপরিকল্পিত কৌশলগত অবস্থান, যেখানে নিজেদের রাজনৈতিক আত্মমর্যাদা ও নেতৃত্ব দাবি করা হয়েছে। যারা রাজনীতি নিয়ে বিশ্লেষণ করেন, তারা জানেন এই কথার ভিতর কতটা অতীত অভিজ্ঞতা, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং ক্ষমতাকেন্দ্রিক আত্মবিশ্বাস লুকিয়ে আছে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি অংশগ্রহণমূলক, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত জরুরি। এমনকি বর্তমান সরকার যদি আগামী পাঁচ বছরের জন্য পুনরায় ক্ষমতায় থাকতে চায়, তাহলেও একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে সেই কর্তৃত্ব নিশ্চিত করা প্রয়োজন। কারণ ক্ষমতার বৈধতা শুধু সংবিধান অনুযায়ী বা আন্দোলনের মাধ্যমে গ্রহণ করলেই আসে না; জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণ ও সম্মতির মাধ্যমেই গণতন্ত্র এবং সরকার কার্যকর হয়।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন দরকার বাস্তবতা নির্ভর, অংশগ্রহণমূলক এবং পরিপক্ব নেতৃত্ব। তাহলেই আমরা শান্তিতে থাকতে পারবো।